অ্যাডমব থেকে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপের মাধ্যমে আয় করবেন যেভাবে
অ্যাডমব রিভিউ। অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট এখন দারুণ জনপ্রিয় এক বিষয়। দেশে সরকারি ও বেসরকারি সব পর্যায়েই অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট নিয়ে বেশ সাড়া পড়েছে। প্রযুক্তি নিয়ে আগ্রহীদের অনেকেই ঝুঁকছেন এদিকে। তবে সব কিছু না জেনেই শুরু করায় মাঝপথে হতাশ হয়ে কাজ ছাড়ছেন অনেকে।
এ জন্য অ্যাপ তৈরির আগে এটির বিপননের দিকটিও জানতে হবে। তা না হলে দীর্ঘ দিনের পরিশ্রম বৃথা হয়ে যেতে পারে। এটির প্রচার না হলে আয়ও হবে না। একটি অ্যাপ থেকে ভালো আয়ের পদ্ধতি নিয়ে এ টিউটোরিয়ালে আলোচনা করা হলো।
ডেভেলপাররা অ্যাপ ডেভেলপ করার পর সেটা কিভাবে মনেটাইজ করতে হবে তা নিয়ে চিন্তায় থাকেন। গুগল অ্যাডসেন্স বাংলাদেশি ওয়েব মনেটাইজারদের মাঝে বেশ জনপ্রিয়। সেই গুগল অ্যাডসেন্সের মোবাইল ভার্সন হচ্ছে অ্যাডমব।
অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপের মধ্যে অ্যাডমবের অ্যাড বসিয়ে সেই অ্যাপ থেকে সহজেই আয় করতে পারবেন ডেভেলপাররা।
অ্যাডমবে দুই ধরনের অ্যাড সবচেয়ে বেশি জয়প্রিয়। ব্যানার অ্যাড ও ইন্টারেস্টিশিয়াল অ্যাড বেশি দৃষ্টি কাড়ে সকলের। ব্যানার অ্যাড অ্যাপ্লিকেশনের স্ক্রিনে দেখা যায়। যেটির সাইজগুলোর মধ্যে সাধারনত ৩২০*৫০ এর ব্যানার বেশি ব্যবহার করা হয়।
অন্যদিকে ইন্টারেস্টিশিয়াল অ্যাড অ্যাপের এক পেইজ থেকে আরেক পেইজে যেতে কিংবা অ্যাপ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ফুলস্ক্রিন জুড়ে আসে। ডিভাইস ভেদে এসব অ্যাডের বিভিন্ন সাইজে তৈরি করা যায়।
যেমন:
– ৩২০*৫০ মোবাইল লিডারবোর্ড
– ৪৬৮*৬০ ব্যানার
– ৪৮০*৩২০ স্মার্টফোন ইন্টারেস্টিশিয়াল
– ৭৬৮*১০২৪ ট্যাবলেট ইন্টারেস্টিশিয়াল
একজন ডেভেলপার অ্যাপের মধ্যে বিজ্ঞাপন সেট করার পর, ব্যবহারকারী যখন ইন্টারনেটে সংযুক্ত হয় তখন বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু হয়। এ বিজ্ঞাপন বেশ কিছু প্যারামিটারের উপর নির্ভর করে দেখানো হয়। যেমন, অ্যাপের কন্টেন্ট কি, অ্যাপ ব্যবহারকারী কোন জায়গায় থাকেন, সেসব জায়গায় কোম্পানির বিজ্ঞাপন, ব্যবহারকারী কি সার্চ করেন গুগলে।
এসব কিছুর উপর নির্ভর করে প্রাসঙ্গিক বিজ্ঞাপন ভেসে আসে। ব্যবহারকারী যদি বিজ্ঞাপন প্রাসঙ্গিক মনে না করেন তিনি চাইলে রিপোর্ট করতে পারবেন।
অ্যাড সেট করার পর তা কত সময়ে এক ভিউ কাউন্ট হবে তা ডেভেলপার অ্যাডমব কন্সোল প্যানেল থেকে সেট করে দিতে পারবেন। সাধারনত ৩০ থেকে ৬০ সেকেন্ডের মধ্যে একটি ভিউ কাউন্ট করা হয়।
অর্থাৎ, ব্যবহারকারী যদি ২ মিনিট অ্যাড দেখেন এবং ডেভেলপার যদি প্রতি ৩০ সেকেন্ডে একটি ভিউ সেট করেন, তাহলে ২ মিনিটে মোট ভিউ হবে চারটি। এভাবে প্রতি ১০০০ ভিউ অনুসারে ডেভেলপারকে পে করবে গুগল।
প্রতি ১০০০ ভিউতে স্থানভেদে ০ থেকে ১০/১৫ ডলার পর্যন্ত পে করে থাকে গুগল। যেমন, বাংলাদেশে কোন ব্যবহারকারী যদি ১০০০ ভিউ করে এবং কানাডার একজন ব্যবহারকারী যদি সমান পরিমান ভিউ করেন- তাহলে কানাডার ১০০০ ভিউয়ের জন্য গুগল ২/৩ গুণ বেশি পে করে থাকে। ভিউগুলো যদি গুগল ইনভ্যালিড মনে করে তাহলে কোন পেমেন্ট নাও করতে পারে।
ভিউয়ের ক্ষেত্রে ভৌগলিক অবস্থান জরুরি একটি বিষয়। কোন স্থানের মানুষের জন্য অ্যাপ ডেভেলপ করা হচ্ছে সেটাও গুরুত্বপুর্ণ।
এ ছাড়াও বিজ্ঞাপনে ক্লিকের উপর পে করা হয়। ব্যবহারকারী যদি বিজ্ঞাপনে ক্লিক করেন সেক্ষেত্রে ডেভেলার ০-১০ সেন্ট থেকে ১০/২০ ডলারও পেতে পারেন। তবে, ডেভেলপার নিজে যদি ক্লিক করেন তাহলে একাউন্ট ব্যান হওয়ার আশংকা থাকে। গুগল এই ব্যপারগুলো ট্র্যাক করে থাকে, তাই বেশ সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়।
বাংলাদেশ থেকে সাধারণত ব্যাংকের মাধ্যমে অ্যাডমবে আসা টাকা তোলা যায়। অ্যাকাউন্টে প্রথম যখন ১০ ডলারের বেশি হবে, তখন গুগল থেকে অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের ঠিকানায় পিন নাম্বার পাঠানো হয় ভেরিফিকেশনের জন্য। সেই পিন নাম্বার অ্যাডসেন্স / অ্যাডমব একাউন্টে প্রবেশ করিয়ে ভেরিফিকেশন করতে হয়।
ভেরিফিকেশনের পর টাকা উত্তোলন করা যায়। অ্যাডমব অ্যাকাউন্টে সুইফটকোডসহ ব্যংক ইনফরম্যাশন দিলে টাকা সরাসরি ব্যংকে চলে যায়। তবে কিছু ব্যাংক টাকা তোলার সময় ইনভয়েস ও পেমেন্ট হিস্টোরি চায়, যা জমা দিলে টাকা রিলিজ করে।
টাকা তোলার জন্য একাউন্টে সর্বনিন্ম ১০০ ডলার থাকতে হয়। কোনো মাসে যদি ১০০ ডলারের বেশি হয়, তাহলে পরের মাসের ২২ থেকে ২৪ তারিখের মধ্যে ব্যাংকে টাকা পাঠিয়ে দেয়া হয়। ব্রিটিশ পাউন্ডের ক্ষেত্রে সর্বনিন্ম ৬০ পাউন্ড হলেই পাঠিয়ে দেয়া হয়। কেউ যদি ফেব্রুয়ারী মাসে ২০০ ডলার আয় করে তবে মার্চ মাসের ২২ থেকে ২৪ তারিখের মধ্যে তার ব্যংকে গুগল পাঠিয়ে দিবে। বাংলাদেশে ব্যংকভেদে, পেমেন্ট ইনভয়েস, পেমেন্ট হিস্টোরি এগুলোর প্রিন্ট আউট দেখিয়ে পেমেন্ট নিতে হয়।
অ্যাডমবের অ্যাড আইওএস অ্যাপ ও উইন্ডোজ ফোনেও ব্যবহার করে থাকেন ডেভেলপাররা।
আরো পড়ুনঃ এডমব অ্যাকাউন্ট বন্ধ(নিষিদ্ধ) হয়ে যেতে পারে যে কারণে